মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ অপরাহ্ন
সাংবাদিককে হুমকি: ‘৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে রোগি দেখবো, আপনি কি করবেন?’
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
‘গ্রাম্য এলাকার একটি হাসপাতালের এমএলএসএস হয়েও তিনি দিব্যি রোগি দেখে যাচ্ছেন, ডাক্তার নিয়োগ দিলে তার বিভিন্ন কারসাজিতে এক রকম বাধ্য হয়েই তারা সেখানে অফিস করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। নিয়োগের পর থেকেই তিনি তার এ অপরাধ কা- চালিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা আজো পর্যন্ত নিয়ে পারেনি। এমনকি স্বেচ্ছায় অবসরে চলে যাওয়ার পরও এখন নিয়মিত অফিস করে রোগি দেখছেন। এলাকাবাসি তার এসব কর্মকা- বন্ধের জন্য নিষেধ তিনি কর্ণপাত করেন নি। রোগি দেখার পর তার দেয়া প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে বাজারের নির্দিষ্ট ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনতেও বাধ্য করেন’। এলাকাবাসির এসব অভিযোগি সত্যতা যাছাইয়ের জন্য সরেজমিন গেলে দেখা যায় তিনি রোগি দেখে ঔষধ কোম্পানীর প্যাডে ঔষধের নাম লিখে দিচ্ছেন।
এমন গুরুতর অভিযোগটি পাওয়া গেছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এমএলএসএস মোঃ শহিদ উল্লাহর বিরুদ্ধে। সরেজমিন হাসপাতালে গেলে দেখা যায় তিনি মহিলা রোগি দেখে ঔষধ কোম্পানীর প্যাডে তার চিকিৎসাপত্র লিখে টাকা নিচ্ছেন এবং ভাটিপাড়া বাজারের একটি ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে নিতে বলেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, মাঝে-মধ্যে রোগিদের ব্যান্ডেজ খোলা ও ওয়াশ করে দেয়া এবং অন্যান্য কাজও করেন। তবে একাজে তিনি প্রশিক্ষিত কিংবা সরকারিভাবে অনুমোদিত নন।
তিনি জানান, জেলার দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ধল গ্রামের মৃত মদরিছ উল্লাহর ছেলে তিনি। গত ২৬ বছর ধরে এখানে চাকুরী করছেন, এ বছরের জানুয়ারিতে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে চলে গেছেন। আপনি ডাক্তার না হয়েও রোগি দেখছেন এবং অবসবে চলে যাওয়ার পরও কেন এই অফিস ব্যবহার করছেন-এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। তবে তিনি জানান, ভাটিপাড়া গ্রামের পূর্বপার্শ্বে তিনি নতুন বাড়ি করছেন বিধায় আপাতত এখানে থাকছেন। তিনি আরও জানান, এ অফিসে তিনি ছাড়া কোন জনবল নেই। ডাক্তার নিয়োগ দিলেও তারা এখানে আসতে বা থাকতে চায় না। এ অফিসের জন্য বরাদ্দকৃত জনবল হচ্ছে পাঁচজন, এরমধ্যে ডাক্তার একজন, মেডিকেল এসিসটেন্ড একজন, ফার্মাসিস্ট একজন, অফিস সহায়ক একজন ও এমএলএসএস একজন। আর মোঃ শহিদ উল্লাহ এমএলএসএস হলেও নিজেকে অফিস সহায়ক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি রেগে গিয়ে সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমি ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে রোগি দেখবো, আপনি কি করবেন?’
দিরাই উপজেলার সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, ভাটিপাড়ায় আপাতত কোন স্টাফ নেই, যে ছিল সে দুই মাস আগে অবসরে চলে গেছে। তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে সে অফিসের কাগজপত্র বুঝিয়ে দিয়ে গেছে, এখন তো অফিস বন্ধ রয়েছে। মোঃ শহিদ উল্লাহ নিয়মিত অফিস করছে এবং পাশাপাশি রোগিও দেখছে-এমন তথ্যে মাহবুবুর রহমান জানান, আমি এ ব্যাপারে জানি না, তবে খোঁজ নিচ্ছি।